বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি জলাশয় শুকিয়ে যাচ্ছে

বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি জলাশয় শুকিয়ে যাচ্ছে

 

আন্তর্জাতিক,বিবিসিনউজ২৪ ডেস্ক: বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি হ্রদ ও জলাশয় শুকিয়ে যেতে চলেছে। ফলে কৃষি, জলবিদ্যুৎ ও মানুষের পানীয় জলের ভবিষ্যৎ মারাত্মক হুমকির মুখে। গত বৃহস্পতিবার (১৮ মে) প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে।

সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের অর্ধেকের বেশি বড় হ্রদ ও জলাশয় শুকিয়ে গেছে বা শুকিয়ে যাওয়ার পথে। এর একটি কারণ অবশ্যই গ্লোবাল ওয়ার্মিং। মানুষের প্রতি তার একগুঁয়ে মনোভাবও আছে।

গবেষকদের মতে, বিশ্বের কিছু প্রধান জলাধার, যেমন ক্যাস্পিয়ান সাগর এবং লেক টিটিকাকা, প্রতি বছর প্রায় ২২ গিগাটন জল হারিয়েছে, যা গত দশকে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি।

ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব গবেষক ফ্যাংফাং ইয়াও এই গবেষণা দলের নেতৃত্ব দেন। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক হ্রদ শুকিয়ে যাওয়ার পেছনে বৈশ্বিক উষ্ণতা এবং মানুষের ব্যবহার ৫৬ শতাংশ অবদান রাখে। এর প্রধান কারণ উষ্ণতা।

বিশ্বের ২০০০টি জলাধার ও হ্রদ পর্যবেক্ষণ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। ১৯৯২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এই হ্রদ এবং জলাশয়ের স্যাটেলাইট চিত্রগুলি পরীক্ষা করা হয়েছিল এবং সেখান থেকেই এই ভয়ঙ্কর চিত্রটি উঠে এসেছে।

গবেষকরা দেখেছেন, মানুষের দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহার, বৃষ্টিপাতের পরিবর্তন এবং ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা বিশ্বব্যাপী জলাশয়ের পানির স্তরকে নিচে নেমে যেতে বাধ্য করেছে। ১৯৯২ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে ৫৩ শতাংশ হ্রদের পানি কমেছে।

শুকিয়ে যাওয়া এসব হ্রদ এলাকায় বসবাস করে প্রায় ২০০ কোটি মানুষ। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় তারা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক অঞ্চলে পানির অভাব দেখা দিয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম মাপকাঠি গড় তাপমাত্রার বৃদ্ধি। এর ফলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বদলে গেছে। আগে যেখানে যেমন বৃষ্টি হতো, এখন তা হচ্ছে না। এর ফলে স্বাভাবিক হ্রদগুলোর পলি আগে যেভাবে জমতো, এখন তা বদলে গেছে। হ্রদ ও জলাশয় শুকিয়ে যাওয়ার পেছনে এটিকে অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিজ্ঞানীরা।

গবেষকরা বলেছেন, বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ধরে রাখতে না পারলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আরও হ্রদ এবং জলাশয় শুকিয়ে যাবে। আর তেমনটি ঘটলে তার প্রভাব হবে ধ্বংসাত্মক।

সূত্র: রয়টার্স, ডয়েচে ভেলে

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top