সাতকানিয়ায় পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদার দাবিতে ইটভাটায় সন্ত্রাসী হামলা ভাংচুর লুটপাটের অভিযোগ
সাতকানিয়ায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় আধুনিক একটি ইটভাটা দখলচেষ্টা, ভাংচুর-লুটপাটের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে মোহাম্মদ নোমান নামের এক ব্যবসায়ী। বৃহস্প্রতিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের মার্চ মাসে এক কোটি পচিশ লক্ষ টাকায় নয় বছরের জন্য বিক্রয় চুক্তির মাধ্যমে ওসমান গণি একটি আধুনিক ইট ভাটা ক্রয় করেন।
কিন্তু ইট ভাটা নেয়ার এক বছর অতিবাহিত না হতেই মৃত নাছির আহমদের পুত্র আনচারুল হক গত ১৮ মে বৃহস্প্রতিবার সন্ধ্যায় সাতকানিয়া উপজেলার এওচিয়া আদর্শগ্রাম এলাকায় নিজের সন্ত্রাসীদের নিয়ে এই হামলা করেন। মামলার বিবরন ও সাংবাদিক সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে জানা যায়, বিশ জনের অধিক সন্ত্রাসী লোকজন নিয়ে মোহাম্মদ নোমানের পরিচালনাধীন ব্রিক ফিল্ডটিতে হামলা করে আনচারুল হক। হামলাকারীরা তিনটি একনলা বন্দুক, লোহার রট, হকিস্টিক ও দেশী অস্ত্র নিয়ে অতর্কিতে আক্রমন করে প্রকল্পে ব্যাপক ভাংচুর চালায়।
হামলাকারীরা চার হাজারের অধিক কাঁচা ইট ভেঙ্গে দেয়ার পাশাপাশি ক্যাশ ভেঙ্গে চল্লিশ হাজার টাকা লুট করে। হামলকারীরা এই সময় প্রকল্পের কর্মকর্তা কর্মচারীদের হাতপা বেধে জিম্মি করে জীবন নাশের চেষ্টা করতে থাকে এবং তাৎক্ষণিক পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে বলে। প্রকল্পের মালিক নোমান নিরুপায় হয়ে তাৎক্ষণিক এক লক্ষ টাকা প্রদান করে। সন্ত্রাসী আরো চার লক্ষ টাকা ১২ ঘন্টার মধ্যে দিতে হবে। অন্যথায় প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিক কর্মচারীদের বের করে দিয়ে মালিক নোমানকে হত্যার করার হুমকি দিয়ে যায়।
প্রকল্পটির মালিক মোহাম্মদ নোমান নিরুপায় হয়ে বিগত ২৩ মে সাতকানিয়া থানায় ১৪জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বর ৩৩/২০২৩)। মামলার আসামীরা হ”েছন,কামাল উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম , সৈয়দুল হক , মোহাম্মদ ঈসা, আবুল কালাম , মোহাম্মদ ফারুক , আবদুল মান্নান , মোহাম্মদ মনজুর হাসান , আবু তাহের, আবদুল কাদের, মো. জামশেদুল করিম চৌধুরী, খোরশেদুল আলম, মোহাম্মদ আবু বক্কর প্রকাশ কালা বক্কর কে আসামী করা হয়। সাতকানিয়া থানায় মামলা দায়ের করার পরও আসামীরা উক্ত এসএমবি ব্রিক ফিল্ডের মালিককে প্রাণ নাশের হুমকি ধমকি অব্যাহত রেখেছে।
যে কারণে নিরুপায় হয়ে প্রকল্পের মালিক মোহাম্মদ নোমান সাংবাদিক সম্মেলন করে বলে লিখিত বক্তব্যে জানান। তিনি বলেন, নিজের পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে এই ব্রিক ফিল্ডটি ক্রয় করেছি। আত্মীয় স্বজন েেক ধার দেনা করে অতিব কষ্টে প্রকল্পটিতে উৎপাদন অব্যাহত রেখেছিলাম। কিন্তু বিগত ২৩ মে সন্ধ্যায় সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে পুরো প্রকল্পের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
আবারও সন্ত্রাসী হামলার ভয়ে কর্মকর্তা কর্মচারীরা প্রকল্প এলাকায় যাচ্ছে না। তিনি অচিরেই মামলায় অভিযুক্ত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবী জানান। এই বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ বলেন, একটি ব্রিক প্রজেক্টে হামলার বিষয়ে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। দ্রæত অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা হবে।
আসামীদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত আছে বলে তিনি জানান। সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, মোহাম্মদ নোমান। এই সময় উপ¯ি’ত ছিলেন, রিপন তালুকদার, তাইজুল ইসলাম ওমান প্রমুখ।প্রসঙ্গত এই বিষয়ে উক্ত প্রকল্প মালিক মোহাম্মদ নোমানের অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় সাংসদ আবু রেজা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী গত ১৩ মে একটি শালিসি বৈঠকের আয়োজন করেন। তিনি প্রকল্পটিতে কোন প্রকার হস্তক্ষেপ না করতে স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ উক্ত আনচারুল হককে লিখিত নির্দেশ দেন। সেই সাথে মোহাম্মদ নোমানকে নির্ভিঘেœ ব্যবসা পরিচালনা করার পরামর্শ দেন।