সুদান থেকে দেশে ফিরলেন ১৩৬ বাংলাদেশি
নিজস্ব প্রতিবেদক, বিবিসিনিউজ২৪ ডেস্ক: সংঘাতপূর্ণ সুদানে আটকে পড়া ৬৭৫ বাংলাদেশির মধ্যে ১৩৬ জন দেশে ফিরেছেন। সোমবার (৮ মে) বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১০টায় তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। তবে এই বাংলাদেশিরা সরাসরি সুদান থেকে আসেননি। সৌদি আরবের জেদ্দা বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তারা ঢাকায় আসেন।
এর আগে রোববার (৭ মে) সুদান থেকে এসব বাংলাদেশিকে উদ্ধার করে সৌদি সামরিক বিমানে জেদ্দায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর বিষয়টি নিশ্চিত করেন সুদানে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ।
এর আগে সৌদি দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, যুদ্ধকবলিত সুদান থেকে ১৩৫ বাংলাদেশি সৌদি এয়ারফোর্সের বিশেষ তিনটি প্লেনে করে গতকাল জেদ্দা পৌঁছান। তখন এসব বাংলাদেশিদের জেদ্দা বিমানবন্দরে স্বাগত জানান সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। এসময় জেদ্দায় অবস্থিত বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হক উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ৩ মে (বুধবার) সুদানে আটকে পড়া ৬৫০ বাংলাদেশি দেশটির রাজধানী খার্তুম থেকে পোর্ট সুদান বন্দরে পৌঁছান। ওই দিন সকালে তাদের বহনকারী ১৩টি বাস বন্দরে আসে। এর আগে ২ মে (মঙ্গলবার) ৬৫০ বাংলাদেশি নিয়ে একটি বাস খার্তুম বন্দর থেকে সুদানের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। বন্দরে এসে দেখা যায়, অনেক বাংলাদেশির পাসপোর্ট নেই। এই ক্ষেত্রে, তাদের একটি নতুন ভ্রমণ নথি তৈরি করতে হবে।
জানা গেছে, পোর্ট সুদান থেকে জেদ্দায় ফেরার জন্য ৬৭৫ বাংলাদেশি অপেক্ষায় ছিলেন। ট্রাভেল পারমিট ইস্যু ও জাহাজের শিডিউল পেতে দেরি হওয়ায় তারা জেদ্দায় পৌঁছাতে পারছিলেন না। তবে জাহাজ না পাওয়ায় বিমানযোগে ১৩৫ জনকে জেদ্দায় নেওয়া হয়।
আফ্রিকার তৃতীয় বৃহত্তম দেশ সুদান, ১৫ এপ্রিল থেকে দেশটির সেনাবাহিনী এবং প্যারামিলিটারি Rapid সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ) এর মধ্যে লড়াই করছে। এ পর্যন্ত অন্তত ৪০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের মধ্যে জাতিসংঘের কর্মী ও মিশরের সহকারী প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা রয়েছেন। তবে প্রকৃত মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সুদানে প্রায় দেড় হাজারের মতো বাংলাদেশি রয়েছেন। এরমধ্যে রাজধানী খার্তুমেই প্রায় ১ হাজার ২০০ বাংলাদেশির বাস। যুদ্ধকালীন প্রায় ৭০০ বাংলাদেশি দেশে ফেরত আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এরমধ্যে আটকে পড়া ৬৭৫ জন বাংলাদেশিকে গত ৩ মে খার্তুম থেকে পোর্ট সুদানে আনা হয়।
এদিকে চলমান যুদ্ধে সুদানে চিকিৎসাসেবা, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহতভাবে বিঘ্নিত হওয়া এবং খাদ্যের মজুত ফুরিয়ে আসায় মানবিক সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিদেশি রাষ্ট্রগুলো আরও আগেই তাদের নাগরিক ও কূটনীতিকদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে সুদান রাজ্য দুটি শীর্ষ সামরিক নেতার একটি কাউন্সিল দ্বারা শাসিত হয়েছে। তারা হলেন সুদানের সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতি জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং দেশটির উপ-নেতা এবং আরএসএফ কমান্ডার জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।